রিমান্ডের নামে পুলিশের নেওয়া ঘুষ ফেরত চান সাতক্ষীরার শিক্ষার্থীরা
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমন করতে সদর থানায় পুলিশের করা দুই মামলায় আসামি হন ৩১ জন। এক মামলায় ১৩ জনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ডে থাকা অবস্থায় তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকা ঘুষ নেওয়া হয়। এছাড়া তাদের ব্যবহৃত অন্তত ১০টি অ্যান্ড্রোয়েড ফোন কেড়ে নেওয়া হয়।
আদালতে হাজিরা দিতে এসে মুখ খুললেন ভুক্তভোগী সেসব শিক্ষার্থীরা। রিমান্ডের নামে পুলিশের নেওয়া সেসব ঘুষ ফেরত চেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে থাকা সাতক্ষীরা জেলার শিক্ষার্থীরা।
সেই সঙ্গে মোবাইলসহ অন্যান্য ব্যবহার্য জিনিসও ফেরত চেয়েছেন তারা। অন্যথায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের দাবির পক্ষে আইনি সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আইনজীবীরা। গত রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুরে সাতক্ষীরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনের চত্বরে প্রেস ব্রিফিং করে এসব কথা জানান আইনজীবী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
আইনজীবী অ্যাডভোকেট শহীদ হাসান জানান, তারা ঝুঁকি নিয়ে ছাত্রদের মামলায় বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দিয়েছেন। ছাত্রদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় রিমান্ডের নামে প্রচুর অর্থ হাতিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহিদুল ইসলাম, তদন্তকারী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ মণ্ডলসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা। অনতিবিলম্বে টাকা ফেরত না দিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাতক্ষীরার অন্যতম সমম্বয়ক ইমরান হোসেন জানান, তাদের বিরুদ্ধে হওয়া দুইটি মামলা এখনও চলছে। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী অনতিবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা জানান, অন্যতম সমম্বয়ক ইমরান হোসেনের কাছ থেকে ৭ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন পুলিশ পরিদর্শক মোল্যা মো. সেলিম। এছাড়া শিক্ষার্থী শাহারুজ্জামানের কাছ থেকে ৬ হাজার টাকা, কাজী সাকিবের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা, ইব্রাহিম হোসেনের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা নেন তিনি। মঈনুল ইসলাম নামে এক ছাত্রের কাছ থেকে ১৪ হাজার টাকা নিয়েছিলেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি তারেক বিন আব্দুল আজিজ, এসএম রোকনুজ্জামানের কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা নিয়েছিলেন সদর থানার ওসি মোহিদুল ইসলাম। এভাবেই পুলিশ কর্মকর্তারা রিমান্ডে থাকা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছ থেকে প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকা ঘুষ নেন। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ব্যবহৃত অন্তত ১০টি অ্যান্ড্রোয়েড ফোন কেড়ে নেন তারা।
পুলিশ সুপার মতিউর রহমান সিদ্দিকী বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। এ বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে সদর থানায় দুইটি মামলা করে পুলিশ। একটি মামলায় আসামি করা হয় ১৮ জনকে এবং আরেকটি মামলায় আসামি করা হয় ১৩ জনকে। প্রথম মামলায় ১৩ জনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Matribhumir Khobor
কমেন্ট বক্স